মহা তান্ত্রিক- প্রথম পর্ব serachoti

হ্যালো আমার প্রিয় হার্নি পাঠক পাঠিকাগণ, আপনাদের মাঘঝে আবার ফিরে আসলাম। এই চটি সিরিজের সকল চরিত্র, নাম, ঘটনা এবং স্থানের নাম সম্পূর্ণ কাল্পনিক। যার বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই। জীবিত বা মৃত কোন ব্যক্তির সাথে কোনরকম ভাবে মিল খুঁজে পাওয়া গেলে তা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত এবং সম্পূর্ণ কাকতালীয়, এর জন্য লেখক কোনো ভাবে দায়ী নয়। আজ আমি বাংলাচটিকাহিনীতে আরেকটি গল্পের সিরিজ চালু করতে চলছি।

লোকটির নাম বীর্যেশ্বর। যাকে ওড়িশার সবাই একনামে মহা তান্ত্রিক নামে চিনে। বীর্যেশ্বর ওড়িশা প্রদেশের শেষ প্রান্তে থাকে। ধনী গরিব সব ধর্মের লোক আসে বীর্যেশ্বরের কাছে। বীর্যেশ্বরের যেই এসেছে সেই কোন না কোন ফল পেয়েছে। বীর্যেশ্বরের অনেক ভক্ত। সব ভক্ত শুভ কাজ বা অশুভ কাজে বীর্যেশ্বরের কাছে পরামর্শ করে।

তেমনি একদিন বীর্যেশ্বর কালীর মন্দিরে বসে ধ্যান করছে। তখন তার এক ভক্ত দিবাকর ও তার স্ত্রী রত্না মন্দিরের এসেছে। দিবাকর সিংহা, বয়স ষাট, সোনা ব্যবসায়ী। তার স্ত্রী রত্না সিংহা, বয়স পঞ্চাশ গৃহীনি। তাদের একমাত্র সন্তান সঞ্জয় সিংহা, বয়স বত্রিশ, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার। বীর্যেশ্বর ধ্যান করছে দেখে লতা তাদেরকে মন্দিরে ঢুকতে দিচ্ছে না। বীর্যেশ্বর তখন ধ্যান ভঙ্গ করে বললো- লতা, ওদের আসতে দে।

লতা দিবাকর ও রত্নাকে ছেড়ে দিতে রত্না বীর্যশ্বরের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলো। রত্না বীর্যেশ্বরের পা ছুঁয়তে বীর্যেশ্বর রেগে বলে উঠলো- দিবাকর তোর বউকে সরা। মন্দিরে মায়ের সামনে আমার পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিস। জানিস না মায়ের সামনে সন্তানের পা ছুঁয়ে প্রণাম করলে মায়ের অপমান হয়। লতা এটাকে সরা।

লতা- আপনারা চলে আসুন।

রত্না- ক্ষমা করুন গুরুজী, ক্ষমা করুন।

বীর্যেশ্বর চোখের ইশারায় লতাকে সরে যেতে বললো।

বীর্যেশ্বর- বল দিবাকর তোর ব্যবসা কেমন চলছে?

দিবাকর- মায়ের আর আপনার আর্শীবাদে আমার সোনার দোকান ভালো চলছে।

বীর্যেশ্বর- ভালো। তা বল এখানে কেন এলি! তোর পরিবারে তো সব ঠিক দেখছি।

দিবাকর- আগ্গে গুরুজী, কিছুদিন আগে আপনাকে নিয়ে আমি যেই মেয়েটির সাথে দেখা করেছি!

বীর্যেশ্বর- কোন মেয়েটি?

দিবাকর- যোশি বাড়ির মেয়ে। আপনি যেই মেয়েটিকে পছন্দ করেছিলেন, মুন্নী।

বীর্যেশ্বর- হ্যা, তা কি হয়েছে?

দিবাকর- মুন্নীকে আপনি যখন পছন্দ করলেন তখন আমি মুন্নীর একটা ছবি ছেলেকে দেখাতে ছেলে পছন্দ করে ফেললো। সামনের সপ্তাহে ওদের বিয়ে। বিয়েতে আপনাকে আসতে হবে।

বীর্যেশ্বর- ঠিকাচ্ছে, যাবো খনে।

দিবাকর- তাহলে আজ আমরা আসি।

বীর্যেশ্বর- আয়।

দিবাকর- মনে করে আসবেন কিন্তু।


বলে দিবাকর বেরিয়ে গেলো। বীর্যেশ্বরের সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেলো। যেদিন দিবাকর তাকে নিয়ে যোশি বাড়ির মেয়ে দেখতে গিয়েছিল। বীর্যেশ্বর মেয়েটিকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। দেখতে কি অপরূপ সুন্দরী, উজ্জ্বল তামাটে ফর্সা, গোলগাল চেহারা, টানা টানা নেশা ভরা ঢুলু ঢুলু দুটো চোখ, তার উপরে সঠিকভাবে প্লাক্ করা একজোড়া ভুরু! গালদুটো যেন ছোট ছোট দুটো তুলোর বল, টিকালো নাক, ঠোঁট দুটোও একেবারে নিখুঁত না পাতলা না মোটা। আর মাথায় ঝিলিক্ দেওয়া মাঝ পিঠ পর্যন্ত লম্বা ঘন কালো চুল। হালকা মেদযুক্ত পেটে নাভিটা যেন ছোট একটা গর্তের মত হয়ে আছে। আর চওড়া কোমরটা যেন মাখন মাখা মসৃন একটা আইনা।


বীর্যেশ্বরের মনে প্রথম সেই নারীকে মনে ধরলো। মুন্নীর দেহ দেখে বীর্যেশ্বরের কাম বাসনা জেগে উঠলো। বাঁড়াটা টিস টিস করতে লাগলো। যেভাবে হোক মুন্নীকে চাই চাই তার। এইসব ভাবতে ভাবতে বীর্যেশ্বরের দিন কেটে গেলো।

পরেরদিন সকালবেলা বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলা দিবাকরের বাড়িতে পৌঁছে গেল। দিবাকর বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলাকে বরণ করে ভোজন শালায় নিয়ে গেলো। দিবাকর একে একে সব পদের খাবার বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলাকে দিতে লাগলো। বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলা খেয়ে উঠতে দিবাকর তাদের নিয়ে অতিথি শালায় বিশ্রাম নিতে লাগলো। বীর্যেশ্বর যখন চোখের পাতা বটবে তখন বাড়িতে উলুধ্বনি বেঁজে উঠলো। সঞ্জয় ও মুন্নীর গৃহপ্রবেশ। বীর্যেশ্বর দৈবশক্তি দিয়ে মুন্নীর রূপ দেখতে লাগলো।


হঠাৎ করে উলুধ্বনির শব্দ বন্ধ হয়ে যাওয়া আর রত্নার চীৎকারে বীর্যেশ্বর বেরিয়ে এলো। বীর্যেশ্বর দেখলো সিঁড়িতে স্পিল খেয়ে দিবাকর পড়ে মারা গেল। তারপর আর কি? সঞ্জয় দিবাকরের সৎকার করলো।


চারদিনের দিন বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলা দিবাকরের বাড়ি গেলো। সবাই চোখে জল। বিশেষ করে রত্নার চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে। তা দেখে বীর্যেশ্বর বলে উঠলো- এই শরীরটা কি? এই শরীর হচ্ছে নশ্বর। আজ এটি দিবাকর রূপে ছিল। কাল এই আত্মা অন্য কারো রূপে হবে। তাই তার প্রয়াণে আমাদের শোক প্রকাশ করা উচিত নয়। হাসতে হাসতে তাকে বিদায় দিতে হবে। এই পৃথিবীতে দিবাকরের এতোটুকু সময় লেখা ছিল৷ দিবাকর কোন অসুখে মরে নি।


বীর্যেশ্বর এই টোপ দিতে রত্না বিশ্বাস করে ফেললো। সঙ্গে সঙ্গে মুন্নীর উপর খেপে গেল। রত্না মুন্নীর দিকে ধেয়ে যেতে সঞ্জয়ের কাকাতো বোন দীপা রত্নাকে ডাক দিল। বীর্যেশ্বর বুঝতে পারলো, ‘রত্না আমাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে।’ রত্না মুন্নীর সামনে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো- চল, বের হো এই বাড়ি থেকে। যবে থেকে তুই এই বাড়িতে এসেছিস তবে থেকে তুই আমার স্বামীর জীবন নিয়ে নিয়েছিস।

দীপা- এখানে বৌদির কি দোষ আছে, কাকীমণি?

রত্না- ও তোর বৌদি না একটা ডাইনি। ও আমার স্বামীর জীবন নিয়েছে। যখন থেকে ও এই বাড়িতে পা রেখেছে ও আমার স্বামীকে খেয়ে ফেলেছে। ও মেরেছে আমার স্বামীকে।

সঞ্জয়- কেমন কথা বলছো তুমি?


বীর্যেশ্বর সুযোগ বুঝে বলে উঠলো- এখানে এই বেচারির কি দোষ আছে? বৌমা হয় তোর বাড়ির। দিবাকর নিজেই তার পুত্রবধূকে পছন্দে করে নিয়ে এসেছে এই বাড়িতে। ওকে অসম্মান করার মানে কি জানিস তুই? তুই দিবাকরের আত্মাকে আঘাত করছিস। সঞ্জয়, তুই মুন্নীকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যা।


বীর্যেশ্বরের কথা শুনে সঞ্জয় মুন্নীকে নিয়ে ঘরে চলে গেলো। বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলা দুপুরের খাবার খেয়ে আশ্রমে চলে আসলো। বীর্যেশ্বর বিশ্রাম নিতে নিতে ভবতে লাগলো, ‘কিভাবে মুন্নীকে ফাঁদে ফেলা যায়!’ বীর্যেশ্বরকে ভাবতে দেখে লতা বলে উঠলো- গুরুজী, আপনি কি কিছু ভবছেন?

বীর্যেশ্বর- না রে লতা।

লতা- গুরুজী, আমি একজন নারী। একজন নারী কিন্তু একশ হাত দূরে থেকে বুঝতে পারে একজন পুরুষের মনের কথা বুঝতে পারে। আপনার কি মুন্নীকে মনে ধরেছে।


বীর্যেশ্বর- লতা, তোর কাছে তাহলে আর লুকিয়ে লাভ নেই। হ্যা রে ভীষণ ধরেছে মনে! যেদিন প্রথম ওকে ওর বাড়িতে দেখেছিলাম সেদিন থেকে! কি করে ওকে কাছে পাবো সেটাই বুঝতে পারছি না?


লতা- আপনার তো অনেক বুদ্ধি গুরুজী! আর গুরুজী, আপনি একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন। রত্না ভুতপ্রেত বিষয়ে ভীষণ ভয় পায়। তাকে যদি ভুতপ্রেতের ভয় লাগানো যায় তাহলে হলো! আর রত্বাকে ভুতপ্রতের ভয় দেখিয়ে সব দোষ যদি মুন্নীর দেহে চাপানো যায়। তাহলে মুন্নী আপনার!


বীর্যেশ্বর মুন্নীর উচ্চতার সাথে লতার উচ্চতা মেপে দেখলো। মুন্নীর উচ্চতা ও লতার উচ্চতা মিল পেয়ে বীর্যেশ্বর বললো- ঠিক বলেছিস তুই। তাহলে আজ রাতে কাজটা সেরে ফেলতে হবে।

লতা- কি কাজ গুরুজী?


বীর্যেশ্বর- শুন তাহলে, ওরা যখন ঘুমাবে তখন আমি জানালা দিয়ে শাড়িটা বের করে আনবো আর তুই সেই শাড়িটা পড়ে রত্নার ঘরের জানালয় আলতা দিয়ে হাতের চাপ বসিয়ে সঞ্জয়ের ঘরের দিকে চলে যাবি। রত্না যখন সবাইকে ডাকতে যাবে তখনি আমি জানালায় হাতের চাপ মুছে ফেলবো। তখন মুন্নীর উপর ক্ষেপে যাবে রত্না।

লতা- গুরুজী, কি উপায় বলেছেন আপনি? আমি আপনার শিষ্য হতে পেরে ধন্য। আপনার মাথায় বুদ্ধি।

বীর্যেশ্বর- যা রাতের জন্য তৈরি হয় গিয়ে।

লতা- আগ্গে গুরুজী।

লতা চলে যেতে বীর্যেশ্বর ঘুম দিল দিল। সেই ঘুম ভাঙ্গলো রাত বারোটা। ঘুম থেকে উঠতে লতা ভাত বেড়ে দেয়। বীর্যেশ্বর, লতা ও কমলা ভাত খেয়ে বেরিয়ে পরলো।

মহা তান্ত্রিক- দ্বিতীয় পর্ব

by gorav1352 01-01-2022 33,739

আগের পর্ব


দিবাকরের বাড়ি পৌঁছে আগে বীর্যেশ্বর সঞ্জয়ের ঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে জানাল খুলে ফেললো। বীর্যেশ্বর জানালা খুলে দেখে মুন্নী কম্বল দিয়ে দেহ ঢেকে সঞ্জয়ের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। তার পাশে পড়ে আছে সকালের শাড়িটা। বীর্যেশ্বর তন্ত্রমন্ত্রের সাহায্য জানালার বাহিরে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে শাড়িটা নিয়ে এলো। বীর্যেশ্বর শাড়িটা লতাকে পড়তে দিলো। এতে লতা চট করে শাড়িটা পড়ে নিল।


লতা শাড়ি পড়ে নিলে বীর্যেশ্বর লতার হাতের তালুতে আলতা লাগিয়ে গামছা নিয়ে গাছের ঝোপে লুকিয়ে পড়লো। লতা আসতে আসতে রত্নার জানালার দশহাত পাশে দাঁড়ালো। লতা বীর্যেশ্বরকে ইশারা দিতে বীর্যেশ্বর তন্ত্রমন্ত্র দিয়ে জানালাটা খুলে বন্ধ করে আবার খুলে দিল। জানালা খোলার শব্দ পেয়ে রত্না ঘুম থেকে উঠে খোলা জানালাটা বন্ধ করে ঘুমাতে যাবে তখনি বীর্যেশ্বর লতাকে ইশারা দিতে লতা জানালার উপর ধব করে হাতের তালুর চাপ বসিয়ে সরে পড়লো। জানালার শব্দ পেয়ে রত্না ঘুরতে হাতের চাপ দেখে ঘাবড়ে গেলো। লতা রত্নার সামনে হেঁটে সঞ্জয়ের ঘরের দিকে গেল। তা দেখে রত্না তার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। এই সুযোগে বীর্যেশ্বর জানালায় হাতের চাপ মুছে দিবাকরের বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে লাগলো। ততক্ষণে লতা শাড়িটা খুলে সঞ্জয়ের ঘরের দিকে ছুড়ে মেরে জানালা লাগিয়ে বেরিয়ে এলো। বীর্যেশ্বর ও লতা নিজের আশ্রমে চলে এলো।


পরেরদিন সকালবেলা বীর্যেশ্বর ধ্যানে দেখে রত্না তার মন্দিরে আসছে। এদিকে এক বাবা মা তার পাগল মেয়েকে সুস্থ করার জন্য মন্দিরে নিয়ে এসেছে। বীর্যেশ্বর দুধের সাথে ঘোল মিশিয়ে রাখলো আর লতাকে পাগল মেয়েটা সহ তার বাবা মাকে ভিতরে আসতে বললো।


পাগল মেয়েটি তার সামনে বসতে বীর্যেশ্বর পাগল মেয়েটার গায়ে জল ছিটিয়ে বললো- বল! তুই কে?

মেয়েটি কিছু বলছে না। শুধু টলতে আছে। বীর্যেশ্বরের মাথা গরম হয়ে গেলো। চাতুর দিয়ে পাগল মেয়েটাকে আঘত করতে করতে বললো- তুই কার ভূত? বলতে থাক! বল! তুই বলবি!

বীর্যেশ্বর লতাকে ইশারা দিয়ে দুধের সাথে ঘোল মিশানো দুধটা খাইয়ে দিতে। লতা পাগল মেয়েটাকে ঘোল মেশানো দুধটা খাবিয়ে দিল।


বীর্যেশ্বর- এখন বলবে! বল! কথা বল! তোর নাম কি? বল!

বীর্যেশ্বর দেখে রত্না বাহিরে দাঁড়িয়ে। বীর্যেশ্বর রত্নাকে আশ্রমে চলে যেতে ইশারা করতে। রত্না চলে গেলো।

বীর্যেশ্বর- কবে থেকে তুই ওর দেহ দখল করেছিস?


বলে জল আর চাতুর দিয়ে ঝাড়তে লাগলো। পাগল মেয়েটার বাবা- হ্যাঁ, গুরুজী, সে গত ৩ বছর ধরে সমস্যায় আছে।

বীর্যেশ্বর একটু ধ্যান করে আবার বলে উঠলো- শিমলা তোর নাম? এইবার বল কবে যাবি এই শরীর ছেড়ে! বল! বল! কবে যাবি এই শরীর ছেড়ে! কবে? বল! বল! কবে ছাড়বি ওর শরীর! বল! কবে যাবি ওর শরীর ছেড়ে! বল!

বলে চাতুর দিয়ে পাগল মেয়েটাকে ঝাড়তে লাগলো। পাগল মেয়েটা বলে উঠলো- চলে যাবো! চলে যাবো!

বীর্যেশ্বর জল ছিটিয়ে দিতে পাগল মেয়েটাকে বেহুশ হয়ে পরে গেলো। বীর্যেশ্বর এবার আশ্রমে এসে রত্নার সামনে বসলো।

বীর্যেশ্বর- আজ কেন এলি তুই?


রত্না- আমার বাড়িতে আমি খারাপ বাতাসের অনুভূতি পেয়েছি গুরুজী। আমাদের বাড়িটাকে বাঁচান গুরুজী! আমাদের বাড়িটাকে বাঁচান! না হলে ঐ ডাইনি! ঐ ডাইনি…!

বীর্যেশ্বর মনে মনে খুশি হলো। বীরেশ্বর বললো- তুই বাহিরে যা আমি আসছি।

বীর্যেশ্বর বলতে রত্না বাহিরে বেরিয়ে গেলো। বীর্যেশ্বর পোটলায় বেশি করে ঘোল আর খাটপাতার রস নিয়ে নিলো। বীর্যেশ্বর বেরিয়ে বললো- চল তাহলে তোর বাড়িতে।

রত্না- চলুন গুরুজী।

বীর্যেশ্বর- লতা তুই এখানে পাহারা দে আমি আসছি। চল রত্না।

রত্না- আসুন গুরিজী।

বলে রত্না বীর্যেশ্বরকে নিয়ে দিবাকরের বাড়িতে গেলো।

রত্না- আসুন গুরিজী! বসুন।

বীর্যেশ্বর- রত্না, তুই বরং দুধ জ্বাল দে সাথে লবঙ্গ দিয়ে ফুটাবি।

রত্না- গুরুজী আপনি কিছু মুখে নিবেন না।

বীর্যেশ্বর- আমার জন্য দুধ নিয়ে আয় যা।


রত্না চলে যেতে বীর্যেশ্বর নিজের বাঁড়া মালিশ করতে লাগলো। ততক্ষণে রত্না বীর্যেশ্বর ও মুন্নীর জন্য দুধ নিয়ে এসেছে। রত্না বীর্যেশ্বরকে দুধের মগ এগিয়ে দিতে বীর্যেশ্বর রত্নার হাত থেকে মগ নিয়ে ঢোক ঢোক করে সব দুধ গিলে ফেললো। এবার রত্না বীর্যেশ্বরকে নিয়ে মুন্নীর ঘরে নিয়ে গেলো। মুন্নী তখন শুয়াতে। বীর্যেশ্বর কুন্ডি বন্ধ করে দিলো। বীর্যেশ্বরকে দেখে মুন্নী ভয়ে উঠে বসলো। বীর্যেশ্বর মুন্নীর পাশে বসতে মুন্নী দূরে সেরে লাগলো। তখন বীর্যেশ্বর বললো- ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই। মুন্নী, আমি যা কিছু করছি তোর এবং তোর বাড়ির ভালোর জন্য করছি। এইজন্য ভয় পাওয়ার কোন দরকার নেই। আমার দিকে তাকা।

মুন্নী- মা, সঞ্জয়কে ডেকে দিন।


বীর্যেশ্বর- চুপ কর। প্রথমে তোর দেহের গভীরে বসে আছে। তার উপর নাটক করছিস।

মুন্নী- আমার শরীরে কিছু নেই। কিছু নেই শরীরে। আপনি কী করার জন্য ভাবছেন?

বীর্যেশ্বর- রত্না, দুধটা এদিকে দে।


মুন্নী- মা দিবেন না। মা সত্যি বলছি আমার ভিতর কিছু নেই মা।

রত্না বীর্যেশ্বর হাতে দুধের মগ এগিয়ে দিতে বীর্যেশ্বর পোটলা থেকে ঘোল ও খাটপাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে নাড়াতে লাগলো।


মুন্নী- এগুলো কি মিশাচ্ছেন আপনারা? না, মা। আমি এটা পান করব না।

বীর্যেশ্বর এগিয়ে যেতে মুন্নী হাত ছুড়া ছুড়ি করতে লাগলো। রত্না মুন্নীর হাত ধরে রাখলো। বীর্যেশ্বর দুধর মগ মুন্নীর সামনে এগিয়ে নিতে! মুন্নী বলতে লাগলো- মা না, আমি খাবো না।

বীর্যেশ্বর- এই দুধ খাও, মুন্নী।

মুন্নী- না।

রত্না- এটা পান করো।

বীর্যেশ্বর- তোকে অবশ্যই পান করতে হবে, মুন্নী।


বলে বীর্যেশ্বর মুন্নীর মুখ চেপে ধরে দুধ মুখে দিতে যাবে। এমনি মুন্নী হাত পা ছোড়া শুরু করলো।

বীর্যেশ্বর- পান কর, মুন্নী। এটা তোর উন্নতির জন্য, মুন্নী। চল, পান কর। আমার কথা শোন।

সঞ্জয়- মা!

মুন্নী- সঞ্জয়।

সঞ্জয়- কুন্ডি খোলো মা।

মুন্নী- সঞ্জয়।

মুন্নী বীর্যেশ্বর ও রত্নাকে ঠেলে কুন্ডি খুলে বাহিরে গেলো। রত্নাও বেরিয়ে গেলো। সেই সুযোগে বীর্যেশ্বর আলমারি থেকে মুন্নীর বিয়ের ঘোমটার আঁচলটা পোটলাতে ঢুকিয়ে বেরিয়ে এলো।

মুন্নী- সঞ্জয়!

সঞ্জয়- মা, এটা কি?


রত্না- গুরুজী বলেছেন তার উপর পেতআত্মা ভর করেছে!

সঞ্জয়- কি আজেবাজে কথা? গুরুজি, দয়া করে। বাবা বেঁচে থাকা পর্যন্ত ঠিক ছিল। এখন, যখন তিনি আর নেই, আপনিও আমাদের সাথে দেখা বন্ধ করুন।

রত্না- তুই কি বলছিস?

সঞ্জয়- ঠিক তুমি যা শুনেছো। আর যদি তোমার কোন সমস্যা হয়, মুন্নী আর আমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব।

বীর্যেশ্বর- তোমার পুত্রবধূকে যে পেতআত্মা ভর করে রেখেছে তাকেই এসব করাচ্ছে।

সঞ্জয়- এসো… আমার সাথে এসো।

বীর্যেশ্বর রেগে গেলো। বীর্যেশ্বর পোটলা নিয়ে রেগে “সে আমাকে ডাকবে” বলতে বলতে তার আশ্রমে চলে গেলো।

বীর্যেশ্বরকে রেগে মেগে ঢুকতে দেখে লতা বললো- কাজ হয়েছে গুরুজী!

বীর্যেশ্বর- না রে।

লতা- তাহলে কি হবে? আপনি কি হেরে গেলেন গুরুজী?

বীর্যেশ্বর পোটলা থেকে ঘোমটার আঁচলটা বের করে বললো- শুন লতা, তুই আর কমলা এখন থেকে প্রতি রাতে দিবাকরের বাড়ির দিকে নজর দিবি। যখনি দেখবি মুন্নী রত্নার ঘরে যাবে তখনি লতা তুই রেডি থাকবি। মুন্নীর বিয়ের ঘোমটার আঁচলটা দিয়ে রত্নার গলা টিপে দিবি। রত্না যখন উঠে পড়বে তখন তুই তখন সরে পরবি। আর জানালা খোলা দেখে রত্না যখন চীৎকার করে সবাইকে ঘরের বাইরে এক জায়গায় জড়ো করবে তখন তুই পালঙ্কে আঁচলটা ছুড়ে মেরে চলে আসবি। আর কমলা, তুই ওরা আসার আগে আমি যা বলবো তা জানলায় লেখে দিয়ে আসবি। তারপর দেখি কেমন করে সঞ্জয় তার স্ত্রীকে বাঁচায় আমার হাত থেকে।

বলে বিশ্রাম নিতে চলে গেলো।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url